রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন

ইরানি শিক্ষার্থীদের বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানি শিক্ষার্থীদের বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

স্বদেশ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়া ইরানি শিক্ষার্থীদেরও ঢুকতে দিচ্ছে না দেশটি। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন ইরানি শিক্ষার্থীর বৈধ কাগজপত্র থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পা রাখামাত্রই তাদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো হয়েছে। ম্যাসাচুসেটস থেকে মিশিগান, সব বিমানবন্দর থেকেই ফেরত যাচ্ছে ইরানি শিক্ষার্থীরা।

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ডক্টরেট করতে যাওয়া এক শিক্ষার্থীকে গত সোমবার ডেট্রয়েট মেট্রো বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর সপ্তাহখানেক আগে নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে বোস্টন থেকে ফেরত পাঠানো হয়। এমন পরিস্থিতি ভুক্তভোগীদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নামী-দামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। আমেরিকান কাউন্সিল অন এডুকেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট টেরি হার্টল বলেন, প্রবেশদ্বারে শিক্ষার্থীদের সাথে কী ঘটবে তা নিয়ে ক্যাম্পাসগুলো এখন আগের চেয়েও বেশি উদ্বিগ্ন। কারণ এটি খুবই অনিশ্চিত ও এলোমেলো। আগে তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ত যখন বিদেশী শিক্ষার্থীরা ভিসা পেত। এখন স্বস্তি হচ্ছে যখন তারা ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পারছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন (সিবিপি) কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের অতিরিক্ত তদন্ত ব্যবস্থায় এমন সব তথ্য সামনে আসছে, যা ভিসা স্ক্রিনিংয়ের সময় ধরা পড়েনি। এ কারণে ভিসা পেলেই কেউ যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবে এর কোনো গ্যারান্টি নেই। প্রতিদিনই শত শত মানুষের প্রবেশ-অনুমতি বাতিল করা হচ্ছে। তবে এ পর্যন্ত কতজন ইরানি শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে, তা জানায়নি সিবিপি। তাদের দাবি, গোপনীয়তা সুরক্ষার কারণে কারো ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। ফলে আইনজীবী ও পরামর্শক সংগঠনগুলোকে মানুষের মুখে মুখে শোনা তথ্যই ব্যবহার করতে হচ্ছে।

পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অ্যালায়েন্স অব ইরানিয়ান আমেরিকানের পরামর্শক আলি রাহনামা জানিয়েছেন, গত আগস্ট থেকে অন্তত ১৭ জন ইরানি শিক্ষার্থীকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আগে সাধারণত বছরে এক-দু’জন এমন পরিস্থিতির মুখে পড়ত। কিন্তু সাম্প্রতিক এই সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। আইনজীবীরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বোস্টনের লগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে অন্তত ১১ শিক্ষার্থীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন অব ম্যাসাচুসেটসের নির্বাহী পরিচালক ক্যারল রোজ বলেন, এটি বোস্টন সিবিপি অফিসের নাকি ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, আমরা জানি না। কারণ এসব হচ্ছে অত্যন্ত গোপনে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি হিসাব মতে, দেশটিতে অন্তত ১০ লাখ বিদেশী শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে, যার মধ্যে অন্তত ১২ হাজার ইরানি। তবে সাম্প্রতিক তৎপরতায় শুধু ইরানেরই নয়, অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীরাও ফেরত গেছেন।

টেরি হার্টল জানান, গত সেপ্টেম্বরে অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া একদল চীনা শিক্ষার্থীকেও ফেরত পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, আমরা বিদেশী শিক্ষার্থীদের অবস্থা নিয়ে চিন্তিত; সে ইরান, চীন বা জার্মানি যে দেশেরই হোক না কেন। সূত্র : সিএনএন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877